গমের পুষ্টি উপাদান ও গমের উপকারিতা
আজকে আমরা জানবো গমের পুষ্টি উপাদান ও গমের উপকারিতা সম্পর্কে । গমের পুষ্টি উপাদান ও গমের উপকারিতা অনেক তা বলে শেষ করা যায়না । তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক গমের পুষ্টি উপাদান ও গমের উপকারিতা সম্পর্কে ।
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত খাদ্যশস্যের মধ্যে একটি হলো গম। গম হলো সবচেয়ে সাধারণ খাদ্যশস্য। যা এক প্রকার ঘাস ”ট্রিটিকাম” থেকে আসে। গম সম্পূর্ন একটি অপরিমেয় শক্তির উৎস ।
গমের উৎপত্তি দক্ষিণ -পশ্চিম এশিয়ায়, কিন্তু বর্তমানে গম মানুষের ব্যবহারের জন্য শীর্ষ খাদ্য শস্যের মধ্যে একটি। বর্তমানে উচ্চা অক্ষাংশে গম চাষ করা হয়।
গমের পুষ্টি উপাদান ও গমের উপকারিতা
গমের আটা বেকড পণ্যের মূল উপাদান, যেমন -রুটি, ব্যাগেল, কেক এবং মাফিনের মতো বেকিং পণ্যগুলিতে ব্যবহার করা হয় গম । এছাড়া গম ভিত্তিক খাবার এর মধ্যে রয়েছে পাস্তা, নুডুলস, সুজি, বুলগুর, কুসকুস ইত্যাদি।
গমের পুষ্টি উপাদান ও গমের উপকারিতা জানা আমাদের জন্য জরুরি । চলুন তাহলে আজকে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক গমের পুষ্টি উপাদান ও গমের উপকারিতা সম্পর্কে ।
গমের পুষ্টি উপাদান ও গমের উপকারিতা
গমে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট , ভিটামিন, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, সালফার ক্লোরিন, সিলিকন,জিঙ্ক , আয়োডিন, মাঝারি পরিমান এ প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং ভিটামিন বি এবং ভিটামিন ই তে সমৃদ্ধ রয়েছে।
গমের ভুসি কার্নেলের বাইরের স্তর যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এবং যা ফেরুলিক এসিড, ফাইটিক এসিড, লুইটেন, স্যাপোনিন নামে পরিচিত। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের দেহে ফ্রি রাডিকেল গুলোকে নিরপেক্ষ করতে সাহায্য করে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যকে বাড়িয়ে তোলে।
গমের জীবাণু , যা বিশেষ করে ভিটামিন ই তে সমৃদ্ধ। এটি সারা বিশ্বে ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করে। গমের জীবাণু তেল শক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে এবং আয়ু বাড়ায়। গমের জীবাণুতে ম্যাগনেসিয়াম এবং জিঙ্কের মতো খনিজ রয়েছে।
গমের পুষ্টি উপাদান ও গমের উপকারিতা
মানব দেহের জন্য গমের পুষ্টিগুন ও উপকারিতা অনেক বেশী । তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক গমের পুষ্টি উপাদান ও গমের উপকারিতা :
গম ডায়বেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে
গম ডায়বেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে। গমে ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ ৩০০টির বেশি এনজাইম রয়েছে। এই এনজাইম গুলো ব্যক্তির শরীরে ইনসুলিন এবং গ্লুকোজ নিরসনে সাহায্য কারী।
গম ফাইবারের একটি উৎস
গম ফাইবারের একটি উৎস । ফাইবার শরীরের হজম প্রক্রিয়াকে বাড়িয়ে তোলে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যকে উন্নত করে। যদি আপনি ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বজায় রাখেন তাহলে আপনার বমি বমি ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফাঁপা এবং প্রসারনের মতো সমস্যা গুলি খুব কম সময়ের মধ্যে ভালো হবে। ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
গম দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে
গম দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। গমে বিটেইন নামক একটি উপাদান রয়েছে যা দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ প্রতিরোধ করে। যা বাতের বেথার জন্য অনেক উপকারী। এর প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট হৃদরোগ এবং ডায়বেটিসের মতো আরও অন্যান্য রোগের ঝুঁকি কমায় ।
গম হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে
গম হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। গমে এক ধরনের উদ্ভিদ আছে যা এন্টারোল্যাকটোন নামে পরিচিত। যা হৃদরোগ থেকে মানুষ করে রক্ষা করতে পারে।
পুরো শস্যজাত যেসব দ্রব্য রয়েছে এবং যে গুলোতে খাদ্য তালিকাগত ফাইবার সমৃদ্ধ রয়েছে, তা রক্তচাপের মাত্রাকে উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে এবং হার্ট – এটাকের সম্ভবনাও কমিয়ে দিতে পারে। গম বেশী পরিমানে খাওয়ার কারনে শরীর এর চর্বি কমে এবং স্ট্রোক এর অগ্রগতিকে ধীর করে দেয়।
গম লিভার ডিটক্সে সাহায্য করে
গম লিভার ডিটক্সে সাহায্য করে। লিভার শরীরের সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীন অঙ্গগুলির মধ্যে একটি। সুস্থ লিভার মানব শরীর কে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
গমে বেরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং উচ্চ ফাইবারের চমৎকার উৎস রয়েছে। যা লিভার কে ডিটট্রিফাই করতে সাহায্য করে এবং লিভার কে সুস্থ রাখায় শরীর থেকে নিয়মিত টক্সিন অপসারন করতে সহায়তা করে।
গম পিত্তথলি প্রতিরোধে সহায়তা এবং মেটবলিজম উন্নত করতে পারে
গম পিত্তথলি প্রতিরোধে সহায়তা এবং মেটবলিজম উন্নত করতে পারে। কেননা গমে রয়েছে অদ্রবণীয় ফাইবার যা একটি দ্রুত এবং মসৃন অন্তের ট্রানজিট সময় নিশ্চিত করতে পারে এবং পিত্ত এসিড এর নিরসন অনেক পিত্ত এসিড পিত্তথলি গঠনের একটি মূল কারন।
গমের রুটি পিত্তথলির পাথর প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। গম মেটাবলিজম উন্নত করে। আমরা জানি গমে প্রচুর পরিমান ফাইবার থাকে যা শরীরের হজম প্রক্রিয়াকে বাড়িয়ে তোলে এবং সামগ্রিক বিপাক কে উন্নত করতে সাহায্য করে। গমের তৈরী খাবার শুধু মাত্র ওজন বাড়ায় না বরং ইনসুলিন ও প্রতিরোধ করে।
ত্বকের স্বাস্থ্য এবং চুলের যত্নে গম খুবই উপকারী
ত্বকের স্বাস্থ্য এবং চুলের যত্নে গম খুবই উপকারী। গমের মধ্যে উপস্থিত থাকা ভিটামিন ই এবং জিঙ্ক ত্বকের পুষ্টি যোগায়। ব্রণের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং ত্বকে সূর্যের ক্ষতি প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
গমের উচ্চ ফাইবার পাচনতন্ত্রকে সার্বোত্তম রাখতে সাহায্য করে এবং নিয়মিত টক্সিন অপসারন করতে সহায়তা করে। ত্বকে তারুণ্য এবং মসৃন করতে সক্ষম। গমের দস্তা সুন্দর ও মসৃন চুল গড়তে সহায়তা করে। বিভিন্ন পরিবেশগত কারনে চুলকে ক্ষতির সম্মুখ হতে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
গম চোখের জন্য খুব উপকারী
গম চোখের জন্য খুব উপকারী । গমে ভিটামিন ই এবং জিঙ্ক ম্যাকুলার রয়েছে যা চোখে ছানি পড়ার ঝুঁকি কমায় এবং গমে থাকা লুটেইন চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে অনেক সহায়তা করে ।
এছাড়া ও গমের আয়রন, ফোলেট , ভিটামিন বি ও ই সেরোটোনিন উৎপাদনে সহায়তা করে এবং শরীরে শক্তির মাত্রা বাড়ায় । যা মানসিক স্বাস্থ ও বিষণ্ণতা সমস্যা প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে এবং সামগ্রিক সুস্থতা বাড়াতে সহায়তা করে।
গমের পুষ্টি উপাদান ও গমের উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জেনেছেন যে গম শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে । আশা করি আপনারা গমের প্রয়জোনীয়তা বুঝতে পেরেছেন এবং আপনাদের খাবার এর তালিকায় গমের পণ্য ব্যবহার করবেন ।
তাহলে আমরা এতক্ষন জানলাম গমের পুষ্টি উপাদান ও গমের উপকারিতা সম্পর্কে । এই গমের পুষ্টি উপাদান ও গমের উপকারিতা সম্পর্কে আপনি জেনে আপনার খাদ্য তালিকায় এর পরিমান নির্ধারণ করতে পারেন ।
আরও নিত্য নতুন টিপস পেতে আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং ফেসবুক পেজে এ লাইক দিয়ে সাথে থাকুন । গমের পুষ্টি উপাদান ও গমের উপকারিতা গমের পুষ্টি উপাদান ও গমের উপকারিতা গমের পুষ্টি উপাদান ও গমের উপকারিতা গমের পুষ্টি উপাদান ও গমের উপকারিতা